ক্লোরামফেনিকল ড্রপ (চোখ ও কানের জন্য)
ক্লোরামফেনিকল ড্রপ (চোখ ও কানের জন্য)
ক্লোরামফেনিকল চোখ ও কানের ড্রপে আছে ক্লোরামফেনিকল যা ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি বন্ধ করার শ্রেণিভুক্ত এন্টিবায়োটিক ও বিস্তৃত পরিধির গ্রাম-পজিটিভ বা গ্রাম-নেগেটিভ উভয় ধরনেরই অনেক ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে সক্রিয় এবং কার্যকর। এটি ব্যাকটেরিয়ার কোষে অবস্থিত রাইবোজোমের সাথে সংযুক্ত হয়ে তার প্রোটিন তৈরিতে প্রাথমিক পর্যায়ে বাধা দেয়। ব্যাকটেরিয়াসমূহ যেমন- স্টেফাইলোকক্কাস, কয়েক ধরনের স্ট্রেপটোকক্কাস, হিমোফিলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা, মোরাক্সেলা ক্যাটারালিস, নাইসেরিয়া গোনোরিয়া ইত্যাদি পরিচিত। চোখের কনজাংকটিভা সংক্রমণকারী জীবাণুসমূহ ক্লোরামফেনিকলের প্রতি সংবেদনশীল হয়।
ক্লোরামফেনিকল চোখের ফোটা ব্যবহারের পূর্বে সতর্কতা
ওষুধ সেবন করবেন না এবং আপনার চিকিৎসককে বলুন যদি-
ক্লোরামফেনিকল বা ক্লোরামফেনিকলের কোন উপাদানের প্রতি সংবেদনশীল বা মায়েলোসাপ্রেশনের রেকর্ড আছে এমন রোগীর ক্ষেত্রে ক্লোরামফেনিকল ব্যবহার করা যাবে না।
নিম্নোক্ত ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে এবং ব্যবহারের পূর্বে চিকিৎসককে দিয়ে যাচাই করে নিতে হবে
ক্লোরামফেনিকল ব্যবহারে এপ্লাস্টিক এনিমিয়া হওয়ার ঝুঁকি থাকে অথবা রক্তে কণিকাসমূহের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এজন্য প্রত্যেক রোগীর ক্ষেত্রে এই ওষুধের উপকারিতা ও ঝুঁকি মূল্যায়নের পরই ব্যবহারের উপদেশ দেয়া যেতে পারে। এই ওষুধটি কেবলমাত্র তখনই ব্যবহারের জন্য পরামর্শ দেয়া উচিৎ যখন সকল বিকল্প চিকিৎসা অকার্যকর প্রমাণিত হয়েছে বা ব্যবহার নিষেধ (ঈড়হঃৎধরহফরপধঃরড়হ) রয়েছে।
যে সকল ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যাবে না
ব্যাকটেরিয়াকে মেরে ফেলে এমন সব এন্টিবায়োটিক, যেমন-পেনিসিলিনসমূহ, সেফালোসপরিনসমূহ, জেন্টামাইসিন, টেট্রাসাইক্লিন, পলিমিক্সিন বি, অথবা ভেনকোমাইসিন ইত্যাদির সাথে ক্লোরামফেনিকল একত্রে ব্যবহার করা যাবে না কারণ ব্যাকটেরিয়ার বংশবৃদ্ধি বন্ধ করার (ইধপঃবৎরড়ংঃধঃরপ) ওষুধসমূহ ব্যাকটেরিয়া মেরে ফেলার (ইধপঃবৎরপরফধষ) ওষুধসমূহের কার্যকারিতা কমিয়ে দেয়।
গর্ভাবস্থায় এবং শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ার সময় সতর্কতা
গর্ভাবস্থায়
গর্ভাবস্থায়, ক্লোরামফেনিকল চোখের ড্রপ ব্যবহার ও শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানোর সময় নিরাপত্তার বিষয়ে কোন প্রতিষ্ঠিত প্রমাণ পাওয়া যায়নি। যেহেতু এটি বিনা ব্যবস্থাপত্রে বিক্রয় করা যায় তাই এটিকে গর্ভাবস্থায় ব্যবহারের অনুমোদন দেয়া হয়নি।
যে মায়েরা শিশুকে বুকের দুধ খাওয়াচ্ছেন
যেহেতু ফ্লোরামফেনিকল মায়ের দুধের সাথে নিঃসৃত হতে পারে, তাই এ ক্ষেত্রে ক্লোরামফেনিকলের ব্যবহার পরিহার করা উচিৎ।
সেবন ও মাত্রা
সবসময় ক্লোরামফেনিকল চোখ ও কানের ড্রপ চিকিৎসক বা ফার্মাসিস্ট ঠিক যেভাবে ব্যবহার করতে বলেছেন সেভাবেই ব্যবহার করা উচিৎ। আপনি নিশ্চিত না হলে আপনার চিকিৎসক কিংবা ফার্মাসিস্টের সাথে আলাপ করে জেনে নিন।
চোখ: পূর্ণবয়স্ক, ২ বছর এবং তার ঊর্ধ্বে শিশু এবং বয়োবৃদ্ধ
সংক্রমিত চোখে ১ ফোটা করে দুই ঘণ্টা পরপর প্রথম ৪৮ ঘণ্টা ব্যবহার করতে হবে। তারপর চার ঘণ্টা পরপর ব্যবহার করা যাবে। শুধুমাত্র যখন জেগে থাকবেন তখন ব্যবহার করবেন। ৫ দিনে কোর্স পূর্ণ হবে। সমস্যা না থাকলেও চিকিৎসা ৫ দিন ব্যাপী চালিয়ে যেতে হবে।
কান: কানের ভিতরে ২ থেকে ৩ ফোটা প্রতিবারে, প্রতিদিন ৩ থেকে ৪ বার ব্যবহার করতে হবে।
আপনি যদি মাত্রাতিরিক্ত ক্লোরামফেনিকল ড্রপ ব্যবহার করে থাকেন তবে আপনার উচিত তাৎক্ষণিকভাবে আপনার চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া বা তার সাথে কথা বলা।
যদি আপনি ক্লোরামফেনিকল ব্যবহার করতে ভুলে যান
যদি আপনি ক্লোরামফেনিকল ব্যবহার করতে ভুলে যান তবে যখনি মনে পড়ে তখনই ব্যবহার করুন। তবে যদি পরবর্তী ডোজের সময়ের কাছাকাছি চলে আসে তবে ভুলে যাওয়া ডোজটি বাদ দিন। কখনই পূর্বের ডোজটি ভুলে যাওয়ার কারণে ২টি ডোজ একসাথে ব্যবহার করা যাবে না।
যদি আপনি ক্লোরামফেনিকল ড্রপের ব্যবহার বন্ধ করে থাকেন
আপনার চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া এই ওষুধের ব্যবহার বন্ধ করবেন না। শুধুমাত্র আপনি ভাল বোধ করছেন বলেই এটির ব্যবহার বন্ধ করা উচিত নয়। কারণ এতে পুরনো সমস্যা আবার ফিরে আসতে পারে। এমনকি আরো খারাপ পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। আর এ বিষয়ে কিছু জানার থাকলে চিকিৎসক বা ফার্মাসিস্টকে জিজ্ঞাসা করুন।
সম্ভাব্য পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া
অন্য সকল ওষুধের মতই, ক্লোরামফেনিকল ব্যবহারে পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে, যদিও সাধারণত সবার ক্ষেত্রে তা ঘটে না।
চোখে ব্যবহারে সাময়িক সামান্য জলুনী ভাব বা খচখচ করার অনুভ‚তির মত সমস্যা হতে পারে। মারাত্মক হাইপার সেনসিটিভিটির চিহ্নসমূহ যেমন, এনজিওনিউরোটিক ইডিমা, অ্যানাফাইলেক্সিস, আরটিকেরিয়া, জ¦র, ত্বকে ফোস্কা পড়ার মত লক্ষণ দেখা দিতে পারে। এমন ক্ষেত্রে তৎক্ষণিকভাবে চিকিৎসা বন্ধ করে দিতে হবে।
যদি এ সকল পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়ার কোন একটি মারাত্মক রূপ নেয় বা বেশ কয়েকদিন ধরে চলতে থাকে অথবা লিফলেটে বর্ণিত পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়ার বাইরে কোন সমস্যা দেখা দেয় তবে অবশ্যই আপনার চিকিৎসককে জানান।
সংরক্ষণ
২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার নিচে সংরক্ষণ করুন। সম্ভব হলে ফ্রিজে রাখুন, কিন্তু ফ্রিজে রেখে বরফে পরিণত করবেন না। শিশুর নাগালের বাইরে রাখুন।