হাঁপানী/ এজমা (Asthma)
সংজ্ঞা ও ওভারভিউ
- হাঁপানী ফুসফুসের একটি দীর্ঘমেয়াদী রোগ যার বৈশিষ্ট্য হচ্ছে শ্বাসকষ্ট এবং নিঃশ্বাসের সময় শিসের মত অথবা সোঁ সোঁ করে শব্দ হয় (wheezing);
- হাঁপানী বয়স্কদের চেয়ে শিশুদের বেশী হয়;
- বেশীরভাগ হাঁপানী রোগীর নাকে অ্যালার্জি, হাঁপানী বা একজিমার পারিবারিক ইতিহাসও রয়েছে।
লক্ষণ ও উপসর্গ
- ঘন ঘন নিঃশ্বাস নেয়া;
- নিঃশ্বাসের সময় শিসের মত শব্দ হয় (হুইজিং);
- রাত্রিকালীন কাশি, বিশেষ করে শিশুদের;
- বুকে চাপ ধরা;
নোট: এই উপসর্গগুলো রাতে ও ভোরে খুব বেশী হয়
হাঁপানীর কারণ
হাঁপানীর নির্দিষ্ট কারণ জানা নেই তবে নীচের যেকোনটি থেকে হাঁপানীর আরম্ভ হতে পারে:
- বাড়ীতে বিড়াল থাকলে;
- তেলাপোকা থাকলে;
- ধূমপান করলে;
- বাড়ীর ধূলায় ক্ষুদ্র পরজীবি থাকলে;
- শরীরচর্চা/ব্যায়াম;
- পারফিউম ব্যবহার করলে;
- ঠান্ডা আবহাওয়া
ক্রনিক অবসট্রাকটিভ পালমোনারী ডিজিজ (সিওপিডি/COPD)
- COPD-র (ক্রনিক ব্রঙ্কাইটিস ও এমফাইসিমা) চিকিৎসা প্রাথমিকভাবে উপসর্গভিত্তিক ও কষ্ট লাঘবকারী;
- যাতে ব্রঙ্কোডাইলেটর, কর্টিকোষ্টেরয়েড ও অক্সিজেন থেরাপী ব্যবহৃত হয়;
- শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমন প্রতিরোধ করা উচিত;
- জ্যানথিন, যেমন – মুখে থিওফাইলিন দেয়া যেতে পারে;
- দীর্ঘমেয়াদী অক্সিজেন থেরাপী, সিওপিডি রোগীর বেঁচে থাকার সময়কে বাড়ায়।
নিম্নোক্ত ওষুধ দ্বারা চিকিৎসা
১। সালবিউটামল
- সালবিউটামল হচ্ছে স্বল্পসময়ের জন্য কার্যকরী β২ এড্রেনার্জিক রিসেপ্টর;
- সালবিউটামল ব্যবহৃত হয় হুইজিং, ঘন ঘন শ্বাস, কাশি ও বুক চেপে আসার প্রতিরোধ ও চিকিৎসার জন্য, যেগুলোর কারণ হচ্ছে হাঁপানী এবং সিওপিডি-র মত ফুসফুসের রোগ।
২। বামবিউটেরল
- বামবিউটেরল হচ্ছে টারবিউটালিনের প্রো-ড্রাগ যা ক্রনিক হাঁপানীর জন্য দেয়া হয়।
৩। বেকলোমেথাসন
- বেকলোমেথাসন একটি সিনথেটিক ষ্টেরয়েড যা হাঁপানীর জন্য দেয়া হয়।
৪। বিটলটেরল
- বিটলটেরল একটি ব্রঙ্কোডাইলেটর, যা হাঁপানী ও অন্যান্য শ্বাসতন্ত্রের রোগে সৃষ্ট ব্রঙ্কোস্পাজম থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য দেয়া হয়।
৫। বিউডেসোনাইড
- বিউডেসোনাইড একটি কর্টিকোষ্টেরয়েড যা ইনফ্লামেটরি বাওয়েল ডিজিজ/আইবিএস, হাঁপানী ও শ্বাসের সমস্যাতেও দেয়া হয়।
কাশির ওষুধ
১। কাশি নিবারণকারী;
২। কাশি নির্গমণকারী ও স্বস্তিদানকারী।
১। কাশি নিবারণকারী
- কাশি সাধারণত শরীরের ভিতরের কোন রোগের একটি উপসর্গ, যেমন – হাঁপানী ও গ্যাসট্রো-ইসোফেজিয়াল রিফ্লাক্স ডিজিজ;
- যেখানে কোন কারণ সনাক্ত করা যাচ্ছে না, সেখানে কাশি নিবারণকারী ওষুধ আরাম দিতে পারে;
- থুতু/কফ জমে যেতে পারে যা ক্রনিক ব্রঙ্কাইটিস ও ব্রঙ্কিয়েকটাসিস রোগীর জন্য ক্ষতিকর;
- কোডিন কার্যকরী হতে পারে, তবে এটা কোষ্ঠকাঠিন্য তৈরি করে ও নির্ভরশীলতা বাড়ায়; ডেক্সট্রোমিথরফেন ও ফলকোডিনের পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া কম;
- ব্রমহেক্সিন একটি মিউকোলাইটিক এজেন্ট যা আঠালো ও অতিরিক্ত মিউকাসযুক্ত শ্বাসতন্ত্রের রোগে ব্যবহৃত হয়;
এমব্রক্সল হাইড্রোক্লোরাইড
নির্দেশনা
একিউট ব্রঙ্কাইটিসসহ আঠালো মিউকাসযুক্ত একিউট ও ক্রনিক শ্বাসতন্ত্রের রোগ, প্রডাকটিভ কাশি, ল্যারিনজাইটিস, ফ্যারিনজাইটিস, সাইনুসাইটিস ও রাইনাইটিস, এজমাটিক ব্রঙ্কাইটিস, ব্রঙ্কিয়েকটাসিস ও ক্রনিক নিউমোনিয়া।
সতর্কতা
গ্যাসট্রিক ও ডিওডেনাল আলসার, কনভালসিভ ডিসঅর্ডার, রেনাল ও হেপাটিক ইমপেয়ারমেন্ট রোগীকে সাবধানে দিতে হবে।
বিরুদ্ধ ব্যবহার
এমব্রক্সল বা ব্রমহেক্সিন-এ অত্যাধিক সংবেদনশীলতার ইতিহাস থাকলে ব্যবহার করা যাবে না।
মাত্রা
১০ বছরের বেশী ও বয়স্কদের জন্য ১০ মিলি (২ চা-চামচ) দিনে ৩ বার; ৫-১০ বছরের শিশুদের জন্য ৫ মিলি (১ চা-চামচ) দিনে ২-৩ বার।
সংরক্ষণ
ওষুধের ধরন অনুসারে বাক্সের গায়ে অথবা ওষুধের বাক্সে প্রদত্ত লিফলেটে নির্দেশিত নিয়মে সংরক্ষণ করতে হবে।